পরিবেশ দূষণ এবং আমাদের সচেতনতা – MICRO SOLAR ENERGY
Responsive image
Article

পরিবেশ দূষণ এবং আমাদের সচেতনতা

পরিবেশ-দূষণ-এবং-আমাদের-সচ

https://www.dailyjanakantha.com/details/article/288620/%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6-%E0%A6%A6%E0%A7%82%E0%A6%B7%E0%A6%A3-%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82-%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A6%BE/

পরিবেশ দূষণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ এই ব্যাপারটি সম্পর্কে আমাদের সচেতনতা আছে। কিন্তু নেই সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ এবং অভিজ্ঞতা যা কাজে লাগিয়ে বাস্তবায়ন করা যায় বসবাসযোগ্য পরিবেশ। ১৯৭০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত শুধুমাত্র এ বছরটি অর্থাৎ ২০১৬ এবং ২০১৭ সাল বাংলাদেশ সরকারের বন এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ অধিদফতর বিশেষ করে শব্দ দূষণ সম্পর্কে প্রচ-ভাবে জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। একজন নাক কান ও গলা রোগের চিকিৎসক হিসেবে খুবই আনন্দিত একটু হলেও রোগীর চাপ কমবে। আরও খুশি হতাম যদি টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সেল ফোনের অপব্যবহার রোধে একক সচেতনতার আয়োজন করত। শুধু মন্ত্রণালয় বা অধিদফতর বললে ভুল করা হবে সোসাল মিডিয়া অর্থাৎ প্রিন্ট এবং ইলেকট্রোনিক মিডিয়াও এ ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যদিও এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘আসুন সবাই শপথ করি, শব্দ দূষণ মুক্ত পরিবেশ গড়ি’ কিন্তু সেটা শুধু শব্দ দূষণের জন্যই বলা হয়েছে।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ অধিদফতর বা দফতর প্রত্যেকেরই সারা বছরের জন্য পরিবেশের ভারসাম্যতা রক্ষার জন্য সেøাগানটা আরেকটু শব্দ পরিবর্তন করে যদি আমরা নিজেদের অন্তরে লালন করি সেটা হবে ‘আসুন সবাই শপথ করি, দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ি’। পরিবেশ দূষণের জন্য শুধু যে শব্দ দূষণ দায়ী তা নয়, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, শব্দ দূষণ ইত্যাদি সব কিছুই পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী। প্রতিকারের জন্য যদিও তাদের ভিন্ন ভিন্ন সেক্টর রয়েছে। আমার মনে হয় জাতীয়ভাবে পরিবেশ রক্ষার জন্য এবং পানি সুরক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত, সচেতন হওয়া উচিত। পানির বেলায় আমি নিশ্চিতভাবে বলব যে পানির অপচয় রোধেও বিরাট বড় শপথ হওয়া উচিত। প্রকৃতি বা স্রষ্টা যে দুটো জিনিস মানুষকে দিয়েছেন পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে যা কখনও ক্রয় করতে হয় না সেটা হলো বেঁচে থাকার জন্য বায়ু এবং পানি। বায়ু বলতে আমি বুঝাতে চাচ্ছি বাতাসের অক্সিজেন, কার্বনডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন এবং অন্যান্য ধূলিকণা, বালিকণা আকরিক সবগুলোকে। একটি পরিপূর্ণ বৃক্ষ বছরে ১৪ কেজি অক্সিজেন নির্গত করে এবং ২০ কেজি কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহণ করে। পানি বলতে ভূগর্ভস্ত এবং ভূপৃষ্ঠস্থ সব পানিকে আমরা ব্যবহার করি।

বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ, প্রযুক্তি আশীর্বাদ না অভিশাপ সে বিতর্কে গেলে আমরা সবসময় বলব বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মানব সভ্যতার অগ্রগতির জন্য এক অনন্য-ধারা কিন্তু বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার পৃথিবীকে যে কোন সময় ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। যেমন যোগাযোগের কথাই যদি আমরা ধরি, সেই কোথায় কবুতরের পায়ে চিঠি বেঁধে পাঠানো থেকে শুরু করে রানারের ডাক বিভাগ তারপর কোরিয়ার সার্ভিস তারপরে টেলিযোগাযোগ তারপরে টেলিযোগাযোগের যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন অর্থাৎ ইলেট্রো ম্যাগনেটিক ইমপালস কে ব্যবহার করে আজ পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে, সবচেয়ে দরিদ্রতম দেশ থেকে সব চেয়ে ধনী দেশে আমরা অনায়াসে কথা বলতে পারি যার নাম হলো মোবাইল ফোন এবং সত্যিকার অর্থে মোবাইল।

বলছিলাম শব্দদূষণের কথা। আমরা সবাই জানি শব্দ একপ্রকার শক্তি যা যে কোন পদার্থের অথবা যে কোন কিছুর মেকানিক্যাল ভাইব্রেশনের জন্য তৈরি হয়। অর্থাৎ যান্ত্রিক কম্পন। গাড়িকে স্ট্রার্ট দিলে শব্দ হবে, গাড়ির হর্ণ বাজালে যেহেতু ডায়াফ্রামের ভিতর কম্পন সৃষ্টি হয় তাই শব্দ হবে। আমরা যারা কথা বলি তাদের যখন ভোকাল কর্ডের ভিতর কম্পোনের সৃষ্টি হয় তখনই শব্দের সৃষ্টি হচ্ছে ইত্যাদি।

শব্দ একটি শক্তি যা শ্রুতি যন্ত্রের বহিকর্ণের ভিতরে যে ক্যানেল আছে তার মাধ্যমে কানের পর্দা পর্যন্ত পরিবাহিত হয়। পর্দায় ধাক্কা খাওয়ার পরে পর্দা এবং অন্তঃকর্ণের মাঝে, মধ্য কর্ণে বায়ুসহ ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র মাংস পেশীসহ যে তিনটি অস্থি রয়েছে তাদের মধ্য কম্পনের সৃষ্টি হয়। যে কম্পন অন্তঃকর্ণের ফ্লুইড বা পানি জাতীয় পদার্থকে ধাক্কা দিলে সেখানে মাইক্রো ভোল্টেজ ইলেকট্রিসিটির উৎপন্ন হয় যা ¯œায়ু কোষ দ্বারা প্রবাহিত হয়ে মস্তিষ্কের যে জায়গাতে শ্রুতি কেন্দ্র স্থাপিত আছে সেখান পর্যন্ত প্রবাহিত হয় এবং সেখানে তার বিশ্লেষণ হওয়ার পরে আমরা তথ্য আদান-প্রদান করতে পারি। এবং সে তথ্যের বিপরীতে কি তথ্য প্রদান করতে হবে তাও আমরা আরেকটি ¯œায়ু কেন্দ্রের (ঝঢ়ববপয ঈবহঃৎব) মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছিয়ে দিতে পারি। মানুষ যখন শুনতে পায় তখন সে কাউকে কিছু শুনাতে আগ্রহী হয় এবং শুনতে পাওয়া শুনাতে আগ্রহী হওয়া এ হলো যোগাযোগ।

অস্বাভাবিক মাত্রার তীব্র শব্দ শ্রবণ শক্তির ওপর খারাপ প্রভাব ফেললেই তাকে শব্দ দূষণ বলা হয়। আকষ্মিক তীব্র শব্দ অথবা অতিরিক্ত শব্দ কোলাহল পূর্ণ অবস্থানের কারণে তাৎক্ষণিক কিংবা ধীরে ধীরে অন্তকরণে ক্ষতির কারনে মানুষ আংশিক বা সম্পূর্ণ বধির হয়ে যেতে পারে। শব্দ দূষণের কারণে রক্ত চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে, হৃদস্পন্দনের পরিবর্তন হতে পারে অর্থাৎ হার্টরেট দ্রুত বেড়ে যেতে পারে অথবা আচমকা হার্টরেট কমে গিয়ে হার্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মানুষ ক্লান্তি বোধ করতে পারে। অত্যন্ত নিভৃতমনে কোন কাজ মনোযোগ দিয়ে করতে পারে না। মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। বিরক্তি হতে পারে, ঘুম না আসতে পারে এবং যখনই ঘুম আসবে না, বিরক্তি হবে মানুষ তার কাজে পরিপূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবে না কাজের যে আউটপুট অর্থাৎ ফলাফল তা কমে যেতে বাধ্য হবে। এবং রাষ্ট্রীয় উন্নতির বিঘœ ঘটবে। তা হলে শব্দ দূষণজনিত জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশাল এক অন্তরায়। শব্দ দূষণের জন্য মানুষ মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।

পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক রাইসুল আলম ম-ল এইবার এই শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিশাল এক কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ডইই-এর মাধ্যমে ৮টি বিভাগীয় শহরে শব্দ দূষণের মাত্রা এবং বিশেষ করে কোন পয়েন্টে কত বেশি শব্দ তৈরি হচ্ছে, কোনটা মানুষের দেহের জন্য ক্ষতিকারক, কানের জন্য অগ্রহণযোগ্য সেটা নির্ণয় করে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এবং গবেষণাটি বৈজ্ঞানিক সম্মত হয়েছে, এতে কোন সন্দেহ আমার নেই।

পরবর্তী কর্মসূচী হিসেবে প্রত্যেকটা বিভাগীয় শহরে একেকটি প্রশিক্ষণের স্থান নির্ধারণ করে অর্থাৎ ৮টি বিভাগে প্রতিটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সংখ্যা ৬০-৭০ এর মধ্যে নির্ধারণ করে যাদের মূল অংশগ্রহণকারী হবেন বিআরটিএ, ট্রাফিক সার্জেন্ট, পরিবেশ অধিদফতর, শিল্প এবং শিল্পপতিদের প্রতিনিধিবৃন্দ, শিল্পে কর্মরত প্রতিনিধিবৃন্দ। যাদেরকে উপরে বর্ণিত বিষয়ে তো শিক্ষা দেওয়াই হবে এবং ২০০৬ সালে তৈরিকৃত শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা সম্বন্ধেও প্রশিক্ষণে ধারণা দেওয়া হবে। এরকমভাবে যদি দুটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাহলে দেখা যাবে ১০০০ থেকে ১২০০ কর্মকর্তা অথবা সচেতন নাগরিক সে শব্দদূষণ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভে সক্ষম হবেন।

গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে যথাক্রমে দুটি করে প্রশিক্ষণ কর্মশালার ব্যবস্থা করা হবে। গাড়ি চালকদের মধ্যে তৃতীয় অর্থাৎ যানবাহন চালকদের জন্য শব্দ দূষণ বিধিমালা এবং শব্দের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহরে বিশেষ করে জনসংখ্যার অনুপাতে যেমন ঢাকা বিভাগে এবং ঢাকা মহানগরে ১২টি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা মহানগরের জন্য ৩টি করে ৯টি, সিলেট, বরিশাল ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের জন্য ১টি করে ৩টি সর্বমোট ২৪টি কর্মশালার ব্যবস্থা করা হচ্ছে যেখানে এম্বুলেন্সের চালকসহ সকল প্রকার চালকদের প্রায় ৪০০০ চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।

সর্বশেষ শব্দ দূষণের প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। যা বিন্যাস হয়েছে ঢাকায় ১৬টি, চট্টগ্রামে ৮টি, রাজশাহীতে ৪টি, খুলনায় ৪টি, সিলেটে ৩টিসহ সর্বমোট ৩৫টি স্কুলে দুটি করে ৭০টি কর্মশালা এবং বরিশালে ৩টি, রংপুরে ২টি, অর্থাৎ ৫টি করে সর্বমোট ৪১টি স্কুলে ৭৫টি প্রশিক্ষণ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হবে। যার মাধ্যমে ১৫ হাজার স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হবে। এবং আমি বিশ্বাস করি এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের কর্ণধার আজকের এই স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রীরা প্রচ-ভাবে উপকৃত হবে। তারাও তাদের পরিবারের সচেতনতামূলক দিকনির্দেশনা দিতে পারবে। আমরা যদি জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে অর্থাৎ টেলিভিশনে ছোট ছোট কিছু বিজ্ঞাপন অথবা সেøাগান দেখাই, তাও কার্যকর ভূমিকা রাখবে। সেগুলা যেমন : আপনি জানেন কি শব্দ দূষণ একটি নীরব ঘাতক। যানবাহনের আরোহীদের প্রতি অনুরোধ আপনার গাড়ির চালকের প্রতি লক্ষ্য রাখুন অপ্রয়োজনে গাড়ির হর্ণ বাজাচ্ছে কিনা। বাজালে অনুগ্রহপূর্বক গাড়ির চালককে তা করতে নিষেধ করুন। গাড়ির চালকদের বলুন অপ্রয়োজনে হর্ণ বাজাবেন না। নীরব এলাকায় হর্ণ বাজাবেন না। অথবা জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে যেমন হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস, আদালত, তার ১০০মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত নীরব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত নীরব এলাকাকে অনিয়ন্ত্রিত উপায়ে নিজে সামান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অন্য ১০ জনের অসুবিধা সৃষ্টিতে বিরত থাকা। সুস্থ পরিবেশে নিজে বাঁচুন এবং অন্যকে বাঁচতে সহায়তা করুন। এই প্রশিক্ষনের উদ্দেশ্য এবং প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীরা কি জানতে পারবেন এবং কিকি প্রয়োগ করতে পারবে তার একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনাও এইবার রইসুল আলম মন্ডল কর্তৃক সম্পাদিত শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রিত সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

শব্দ দূষণের উৎস সম্বন্ধে যদি আমরা দেখি শব্দ দূষণ সৃষ্টি জন্য প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট কারণগুলোই দায়ী। প্রাকৃতিক উৎসগুলোর মধ্যে রয়েছে বাজ পড়ার শব্দ, মেঘের গর্জন এবং মনুষ্য সৃষ্ট শব্দ দূষণ এর মধ্যে রয়েছে গাড়ির হর্ণ, ইট ভাঙ্গার মেশিন, মিকচার মেশিনের শব্দ, ভবন নির্মাণের পাইলিং এর শব্দ, জেনারেটরসহ বিভিন্ন মেশিনের শব্দ, কলকারখানার মেশিনের শব্দ, মিউজিক বা মাইকের শব্দ, আতশবাজির, এম্বুলেন্সের সাইরেন, ট্রেনের হুইসেলের শব্দ, লঞ্চ, স্টিমারের শব্দ, জাহাজের হুইসেলের শব্দ, বিমান ওড়ার শব্দ সর্বোপরি মোবাইল ফোন (রি টোন) কর্তৃক শব্দ দূষণের যে মাত্রা যা আমাদের শরীরকে প্রচ-ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। মস্তিষ্ককে অলস করে রাখতে চাচ্ছে। এবং যার অপব্যবহার সামাজিক বিশৃঙ্খলার কারণ হিসেবে উঠে আসছে।

শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের আইন যথেষ্ট নয়। আইন প্রয়োগও যথেষ্ট নয়। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি বেসরকারী সংগঠনসমূহ এবং সংবাদ মাধ্যমে নিয়োজিত ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে যারা শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন।

ঢাকাসহ অন্যান্য বড় শহরে শব্দ দূষণ একটি মারাত্মক সমস্যা। এখনই প্রয়োজন একে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্মের মানষিক স্বাস্থ্য বিকাশ নিশ্চিত করা ও সামাজিক অস্থিরতা দূর করা। এক্ষেত্রে প্রয়োজন সরকারী প্রশাসন, বেসরকারী সামাজিক সংগঠন এবং প্রচার মাধ্যমগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা।

সভ্য সমাজ বির্নিমাণ, বুদ্ধিদীপ্ত ভদ্র ও বিকশিত ভবিষ্যত প্রজন্ম তৈরির স্বার্থে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ আজ অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে সকলের বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন। আমাদের মনে রাখতে হবে যে শব্দ দূষণে যে দুটি প্রজন্ম প্রচ-ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার একটি হলো শিশু আরেকটি হলো বয়স্ক। অর্থৎ যারা এই সমাজে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাওয়া উচিত। সবচেয়ে বেশি যতœ পাওয়া উচিত। যেই শিশু জাতির ভবিষ্যত তারা যদি শৈশবেই মানসিক অস্থিরতায় ভোগে তাহলে সমাজ বির্নিমাণে তাদের কোন ভূমিকাই থাকবে না। আবার আজকে যারা বৃদ্ধ প্রজন্ম, বয়স্ক প্রজন্ম যারা আমাদের এই সমাজটাকে আমাদের বসবাসের উপযোগী করে তৈরি করেছিলেন তাদের প্রতিও আমরা অবহেলা প্রদর্শন করব এটাই প্রতীয়মান হবে। সুতরাং এই দুই প্রজন্মকে শ্রদ্ধা দেখানো মানেই শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ।

একই সঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য আমাদের কয়লা, প্রাকৃতিক তেল ও গ্যাসনির্ভর বিদ্যুত কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। জোর দিতে হবে দূষণমুক্ত শক্তি উৎপাদনের ওপর সৌর, বায়ু পারমাণবিক এবং পানি থেকে উৎপাদিত হতে পারে। দিনের বেলায় সৌরশক্তির ব্যবহার এবং রাতের বেলা জৈব জ্বালানি ব্যবহার করে যাতে বিদ্যুতশক্তি ধারাবাহিকভাবে পাওয়া যায় সেজন্য উন্নয়নমূলক গবেষণায় ব্যয় বাড়াতে হবে।